"যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ "

Aug 5, 2023 - 11:49
Aug 5, 2023 - 11:51
 0  12
"যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ "

আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নির্বাহী বিভাগের ওপর নজরদারির জন্য বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আবার বিচার বিভাগ রয়েছে রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য।

তাই সবচেয়ে দুর্বল নাগরিকটির সঙ্গে যদি রাষ্ট্র অবিচার করে, বিচার বিভাগ দুর্বলের পক্ষে রায় দিয়ে রাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে থাকে।

তা ছাড়া রাষ্ট্রে রয়েছে বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যেমন নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। যেমন মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন। এসবই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন অতি আবশ্যকীয় উপাদান।

এগুলোর প্রতিটির আলাদা আলাদা কাজ এবং প্রতিটিই অন্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত, যেমন মোটরগাড়ির ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী না করে রাষ্ট্রের কাছ থেকে সাধারণ নাগরিকেরা ন্যায়বিচার ও সুশাসন আশা করতে পারে না।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোর অবস্থা মৃত প্রায়? যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের স্বার্থে আমাদের রাষ্ট্রিয় কাঠামোর এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর গলা টিপে ধরেছে!

বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত যে তিনটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে, প্রতিবারই কিন্তু হেরে যাওয়া দল ভোটে কারচুপি, বৈদেশিক শক্তির হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছে।  ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভিযোগ  নতুন না। সেটা নিয়ে আন্দোলন করা যায়,কিংবা আদলতে যাওয়া যায়। কিন্তু কেয়ারটেকার সরকারের নামে যেসব সুশীল এসে ক্ষমতায় বসে,যাদের সাথে জনগনের কোন যোগাযোগ নেই তাদের উপরও কি পুরোপুরি আস্থা রাখা যায়? তার ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর তাদের কোন জবাবদিহি বা দায়বদ্ধতা থাকে না। এভাবে কোন সভ্য দেশেই গনতন্ত্র আগাতে পারে না।

বিএনপি বিরোধী দলে থাকাকালীন সংবাদমাধ্যম, বিচার বিভাগ কিংবা ইলেকশন কমিশনের স্বাধীনতা নিয়ে ও কথা বললেও তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন এসবের ভীষনভাবে দলীয়করন করে এদের কার্যত অথর্ব প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে এবং আওয়ামী লীগ ও তার ধারা অব্যাহত রেখেছে ।

দলীয় সরকারের অধীনে সারা পৃথিবীতেই ইলেকশন হয় এবং সেগুলো গ্রহণযোগ্যও হয়। প্রতিবেশী দেশের দিকে তাকালেই আপনি তা দেখতে পাবেন।প্রতিবেশী দেশ পারলে আমরা পারবো না কেন?

এজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সংলাপের মাধামে সমাধান বের করে আনতে হবে। আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শক্তিশালি করে তার উপর সবার আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

সবচেয়ে বেদনাদায়ক  হলো নাগরিক সমাজের যেসব সংগঠন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার, সেগুলোর কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে খুবই কঠোরভাবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, দুর্নীতি ও মানবাধিকার নিয়ে দেশে ও বিদেশে সমালোচনা ও উদ্বেগের ঘাটতি নেই।

বিগত বছরগুলোতে তার মাত্রা বেড়েছে। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকে বাধাহীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে দিলেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব। আশা করি নতুন জাতীয় নির্বাচনে এ বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

বায়েজিদ খান Love to read, write and travel.....