পরাশক্তিদের প্রক্সি বিশ্বযুদ্ধে, তৃতীয় বিশ্বে নাভিশ্বাস

Mar 20, 2023 - 08:01
 0  86
পরাশক্তিদের প্রক্সি বিশ্বযুদ্ধে, তৃতীয় বিশ্বে নাভিশ্বাস

জিনিসপত্রের দাম রকেট গতিতে বেড়েই চলেছে কিন্তু বাড়ছে না আয়৷ সংসারের খরচ সামাল দিতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন৷ আসছে রোজায় অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে শঙ্কা অর্থনিতীবিদদের। সরকারের মন্ত্রী বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ কিন্তু কবে কমবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম?

পৃথিবীতে অনেকটা অঘোষিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। ইরান রাশিয়ার সাথে সরাসরি যুদ্ধের মাঠে আছে। ভারত আর চীন তেল কিনে রাশিয়ার ইকোনমি টিকিয়ে রেখেছে। আমেরিকা ইতিমধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে এফ ১৬ যুদ্ধ বিমানের প্যাকেজ দিয়েছে আর চীনের বিরুদ্ধে দিয়েছে বানিজ্য নিষেধাজ্ঞা ।

চীনের বিরুদ্ধে আমেরিকার সবচেয়ে বড় অস্ত্র সেমি কন্ডাক্টর বা মাইক্রোচীপ। আমেরিকা ইতোমধ্যে মাইক্রোচীপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই মাইক্রো চীপ ছাড়া চীনের বড় বড় কম্পানির উৎপাদিন বন্ধ হয়ে যাবে। আর চীনেরজন্য জনা খারাপ খবর হলো,এই মাইক্রোচীপ অন্য যে দেশগুলো উৎপাদন করে ,তা সবাই আমেরিকার মিত্র। চীনের একটাই উপায় নিজেই মাইক্রোচীপ তৈরি করা কিন্তু তা অনেক সময় সাপেক্ষ।

পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী গ্যাং আগেই বুঝতে পেরেছিলো ,রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালাবে ,অথবা ইউক্রেন কে নিয়ে ন্যাটো যে ফাদ পেতেছিল, রাশিয়া তাতে পা দিবে। তাই তারা দ্রুত আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। আর রাশিয়ার কোন উপায় ছিলো না, আপনি আপনার বাড়ির সামনে অবশ্যই পারমাণবিক বোমা দেখতে চাইবেন না।

ইউক্রেন রাজনৈতিক ভুল করেছে ,তারা নিরপেক্ষ থাকতে পারতো।সেক্ষেত্রে হয়তো জেলেনিস্কির পশ্চিমা মিত্রতা হুমকির মুখে পড়তো। আমেরিকা চেয়েছিলো ইরাকের মত রাশিয়াকে একঘরে করতে। কিন্তু তা পারেনি। তাই আমেরিকা চাচ্ছে  এই যুদ্ধ লম্বা হোক। রাশিয়ার ইকোনমি শেষ হয়ে যাক। চীন এক্ষেত্রে রাশিয়ার কূটনীতিক অবস্থানে বিশাল অবধান রাখছে। আমারিকার বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তানে ইমরান খান যুদ্ধের শুরুতেই ক্ষমতা হারিয়েছে। পাকিস্তানে এখন আমেরিকান ব্যাকড সরকার ।

আমেরিকা ব্রিটিশদের মাধামে এখন অস্ত্র বিক্রি করছে ইউক্রেনে।চীন ইতিমধ্যেই বিরাট পশ্চিমা বিরোধী সাফল্য অর্জন করেছে। সৌদি আরব আর ইরানের মাঝে বহুদিনের বিবাদ মিটিয়ে তাদের এক টেবিলে বসাতে পেরেছে। যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বিরাট ধাক্কা। সৌদি আরব এখন দুই দিকে খেলতে চাচ্ছে। আরব বসন্তের পর মিশরের হোসনি মোবারকের সরকারের পিছনে না দাড়ানোর জন্য সৌদি আরব আমেরিকার প্রতি আগের মত আর আস্থা রাখতে পারছে না। এছাড়াও সৌদি আরব অনেক দিনের ইয়েমেন যুদ্ধ শেষ করতে চাইছে। ফলে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরাইল অনেকটাই এক ঘরে হতে যাচ্ছে ,আর মধ্যপ্রাচ্যে বড় শক্তি হতে যাচ্ছে ইরান।

 পৃথিবী আবার দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ পুতিনকে পরোক্ষ সাপোর্ট দিচ্ছে। ল্যাটিন আমেরিকায় ও তাই অপর পক্ষে আমেরিকা আর ন্যাটো তাদের সাথে আছে জাপান,দক্ষিন কোরিয়া আর ফিলিপাইন,তাইওয়ান। ইউরোপে ফ্রান্স,ইতালি নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে , অপরদিকে হাঙ্গেরী অনেকটা সরাসরি পুতিনের পক্ষে। বেলারুশ তো যুদ্ধের মাঠেই আছে।

পৃথিবী এখন অস্ত্রের গুদামে বসে আছে। আর মুদ্রাস্ফীতি এবং মন্দা মানুষের নাভিশ্বাস তুলেছে। এই যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশেও ভীষন ভাবে পড়েছে ,একদিকে খাদ্যর দাম মানুষের নাগালের বাইরে,আরেকদিকে দুই শক্তির দলে থাকার কূটনীতিক চাপ।

 উত্তর কোরিয়া মিসাইল পরীক্ষা চালাচ্ছে। রাশিয়া পারমানবিক সাবমেরিন দেখাচ্ছে। আমেরিকান পারমানবিক বোমা বহনে সক্ষম বি ফিফটি টু বিমান মোতায়েন করেছে। কোটি কোটি মানুষ খাদ্যর ঝুকিতে। এই যুদ্ধ কি ইউরোপে সীমাবদ্ধ থাকবে না ছড়িয়ে পরবে দুনিয়ার সব প্রান্তে ,তার কোন উত্তর নেই আপাতত।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

বায়েজিদ খান Love to read, write and travel.....