ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিচারিতা ও পশ্চিমা মানবিকতার মুখোশ
![ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিচারিতা ও পশ্চিমা মানবিকতার মুখোশ](https://banglamirror.net/uploads/images/202303/image_870x_641000a214c5e.jpg)
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বিশ্বের ৪০ বিশ্বনেতা।
চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় পূর্ণ পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে। এই চিঠিই হয়তো পশ্চিমা মূল্যবোধ এবং উদার রাস্ট্র এবং সমাজ ব্যবস্থার উদাহরন হিসাবে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ডা ইউনুসের জন্য এই চিঠি কেনো? সে প্রশ্ন উঠতে পারে।
তিনি কিভাবে দরিদ্র বিমোচন করেছেন বাংলাদেশের মানুষও তা ঠিক ঠাক জানে না। অনেকে বলে ডা ইউনুস নাকি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে চান। সেটা আমরা ঠিক জানি না এ কথা ঠিক কিনা।
তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে হলে ইউনূস সাহেব কে মানুষের কাছে আসতে হবে। শেখ হাসিনার কথা ধরা যাক,উনি বিদেশী চিঠির মাধ্যমে এদেশে রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করেন নি।
বঙ্গবন্ধু হতার পর শত প্রতিকূলতার মাঝেও শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছেন। নিজের দলকে মবিলাইজ করেছেন। নিজের কথা ,নিজের দলের কথা,মানুষকে শুনিয়েছেন। তারপর এই রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করেছেন। কিন্তু ইউনূস সাহবের মানুষের সাথে কোন সম্পর্ক নাই। একখানা নোবেল আছে।
মালালা ইউসূফ জাইয়ের কথা ধরা যাক যিনি নিজেও নোবেল পেয়েছিলেন। কিন্তু আফগানিস্তানে পশ্চিমা বাহিনীর বিমান হামলায় যখন সাধারন মানুষ ,নারী ,পুরুষ মারা যেতো উনি কোন প্রতিবাদ করতেন না। এই হিপোক্রেসির জন্য আফগানিস্তানের মানুষ তাকে পশ্চিমাদের ব্রান্ড এম্বাসাডর হিসাবেই দেখে। যিনি দামি জামা কাপড় পরে,দেশে দেশে বাক স্বাধীনতার কথা ও নারী স্বাধীনতার কথা বলবেন কিন্তু পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নে আফগানিস্তানের মানুষের লাশ নিয়ে ও চুপ থাকবেন।
তাইতো পশ্চিমাদের বিদায়ের সাথে সাথে আফগানিস্তানের আরেক পশ্চিমা ব্রান্ড এম্বাসাডর আশরাফ গানি নিজের দেশের জনগনকে তালেবানের হাতে রেখে পালিয়েছেন। একজন রাজনৈতিক নেতা হলে পালাতানে না,থাকতেন নিজ জনগনের সাথে।
ইউনুস সাহেব ও অনেকটা মালালা ইউসুফ জাইয়ের মত। যেমন ধরা যাক ভূমধ্যসাগরে যে বাংলাদেশি অভিবাসী বা ইউরোপ সীমান্তে অভিবাসী প্রত্যাশীদের সাথে যে অমানবিক আচরন করা হয়,ইউনূস সাহেব তখন চুপ থাকেন। সেখানে পশ্চিমা মূল্যাবোধ চাপা পরে যায়। বাংলাদেশের খারাপ সময় এমনকি,করোনার সময় যখন দেশের মানুষ ভয়াবহ দুঃসময় এর মধ্যে ছিল তখন উনি কই ছিলেন, তাহলে নোবেল পেলে মনে হয় ,এমন গরীব দেশের মানুষের খোজ না নিলেও চলে।
পশ্চিমা মূল্যবোধ এমনি যার উদাহরন দুনিয়া জুড়ে,ইরাক ,আফগানিস্তান,লিবিয়া এমনকি ইসরাইলের প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কাজের জন্য পশ্চিমারা কোন চিঠি লিখতে পারে না। এমনকি জাতিসংঘে একটা নিন্দা প্রস্তাবও আনতে পারে না। কিন্তু গনতন্ত্র রক্ষার নামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচিত সরকারকে হঠাতে কুচক্র করার জন্য। এসব পশ্চিমা মানুষই তো ডা ইউনূসের জন্য চিঠি লিখেছেন। যার প্রকৃত কারন বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালোভাবে জানে।
২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী এই দেশে যখন সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতা নিলো এক নতুন মোড়কে, তখন তারা ভেবেছিলো রাজনৈতিক দলগুলির দুর্নীতি প্রবণতারে উন্মোচন করে জনগণরে নিয়ে নতুন এক খেলার মাঠে নামিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু সামরিক বাহিনী কেন্দ্রীক ভীতি এবং অতীত অভিজ্ঞতার কারনে জনগণের সাড়া তেমন না পাওয়াতে তারা একটা ভিন্ন ঘরানার রাজনৈতিক শক্তি তৈরীর আহ্বান জানালো ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি, আর ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও তাতে সাড়া দিলেন।
নাগরিক শক্তি নামে একটা রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করলেন তিনি। এই উদ্যোগে জড়ো হয়েছিলো আরো বেশকিছু নাগরিক সুবিধাভোগী ইন্টেলেকচ্যুয়াল আর রাজনীতিবিদ। তারপর বহু ঘাটে জল গড়িয়েছে। দেশে আবারো তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হইছে। সেই নির্বাচনে একচেটিয়াভাবে আওয়ামি লীগ জয়যূক্ত হয়ে সরকার গঠন করছে। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনুসের এই সুবিধাভোগী চরিত্র বাংলাদেশের মানুষের অজানা নয়।
What's Your Reaction?
![like](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/like.png)
![dislike](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/dislike.png)
![love](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/love.png)
![funny](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/funny.png)
![angry](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/angry.png)
![sad](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/sad.png)
![wow](https://banglamirror.net/assets/img/reactions/wow.png)