আবেগ দিয়ে ক্রিকেট আর কতদিন?

Jul 7, 2023 - 11:38
 0  65
আবেগ দিয়ে ক্রিকেট আর কতদিন?

নাটক দেখে অভ্যস্ত জাতি আমরা। মাশরাফি যখন শেষ সময়ে ক্রিকেট খেলতেন অনেকটা জোড় করেই। আমরা বলতাম,আহারে পায়ে ব্যাণ্ডেজ জড়িয়ে খেলছে ছেলেটা। তখন ক্রিকেট ধারাভাষ্যকররা বলতেন ,মাশরাফির দলে কাজটা কি? যে কিনা দশ ওভারের স্পেল পুরো করতে পারছে না!

ক্রিকেট মূলত এটাই।এখানে ইমোশনের কোন জায়গা নেই। ম্যাচ জেতার জন্য  আপনার প্লেয়ার দরকার অন্য কিছুর জন্য নয়। ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়ারকে ভিন্ন ভিন্ন রোল দেয়া হয়।

বাংলদেশের ক্রিকেটের যে অবস্থা তা ধানমন্ডির মাঠ গুলোর দিকে তাকালে আপনি বুঝতে পারবেন। এখানে অনেকগুলো ক্লাব আছে কিন্তু  কোথাও কোন ম্যাচ নাই,শুন্য পরে আছে। ঘরোয়া  ক্রিকেট বলতেও আসলে কিছু অবশিষ্ট নাই যা হয় তা শুধু আনুষ্ঠানিকতা। সারাদেশেই একই অবস্থা। ক্রিকেট এখন শুধুই ব্যবসা।

তামিম ইকবাল নিঃসন্দেহে  এদেশের সেরা ওপেনার। ওদিকে হাতুরাসিং ও এদেশে এ যাবত যত কোচ এসেছেন তাদের মাঝে সেরা। তামিম নাকি ফিটনেস ছাড়াই ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন, এ নিয়েই যত গন্ডগোল। ফিটনেস না থাকলে বড় বড় দলে প্লেয়ার বাদ পরে ,এটাই নিয়ম। কিন্তু আমরা জাতিই এমন যে,নিয়ম মানতেই অভ্যস্থ নই। ইংল্যান্ডের ব্রড, এন্ডারসনরা এই চল্লিশে এসেও দিব্যি খেলে যাচ্ছে কিন্তু আমরা কেন পারছি না এই প্রশ্নের উত্তরও তো খোঁজা দরকার।

টেস্ট ক্রিকেটে ইন্ডিয়ার রাজত্ব করার ধারাটা শুরু হয়েছে ক্যাপ্টেন ভিরাট কোহলির হাত ধরে। খুব সম্ভবত ক্যাপ্টেন হিসেবে কোহলির উইনিং পার্সেন্টেজ ধোনির চেয়েও বেশি ছিলো। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সেই কোহলির কাছ থেকে ক্যাপ্টেন্সি কেড়ে নেয়া হলো। এ ঘটনার পরে কিন্তু কোহলি চাইলেই অবসর নিয়ে নিতে পারতেন। তাঁর জন্য অবসর নেয়া অনেক সহজ সিদ্ধান্ত হতো কেননা ভারতের হয়ে অর্জন করার মতো কোনো কিছুই তার বাকী ছিলো না। কিন্তু তিনি জিনিসটাকে এতটা পার্সোনালি না নিয়ে সবকিছুর জবাব মাঠেই দেয়ার চেষ্টা করেছেন বা করছেন।

তামিমের অবসরের ঘটনাটাও যে ক্যাপ্টেন্সি রিলেটেড ইগো-ক্ল্যাশ থেকে হয়েছে এটা পানির মতো পরিষ্কার। কি এমন হতো যদি তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে ওয়ার্ল্ড কাপে যেতে না পারতেন? একজন ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললে কি আমরা তামিম ইকবাল খানকে চিনতে পারতাম না? ম্যানেজমেন্ট আর কোচকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারলেই সবকিছু হয়ে যায় না।

তামিম ইকবালকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখলেও তামিম ইকবাল দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে বাধ্য,সাকিবকে একাদশের বাইরে রাখলেও সাকিব সেটা মানতে বাধ্য কেননা কোচ এবং ম্যানেজমেন্ট এর কথায় শেষ কথা। একটা দলে ৪-৫ জন লিডার থাকার চেয়ে একজন(কোচ) কে লিডার মেনে নেয়ায় শ্রেয়।

তামিমের হয়তো বাংলাদেশ দেয়ার মত আর তেমন কিছু নাই , কিন্তু তার ভাল রিপ্লেস এই সময়ে আছে? এমন কাউকেও তো দেখা যাচ্ছে না।

তামিম এখনও অফসাইডে যে ড্রাইভ করে ,তা অন্য কেউ বাংলাদেশ টিমে করতে পারে ,তা দেখি নাই। কিন্তু তামিম আর কয়দিন? সবদলেই চায় তার দলে ,বাহাতি একজন ওপেনার থাক। আমাদের রিপ্লেস খোজার উপায় নাই , ঘরোয়া ক্রিকেট শেষ,অধিকাংশ ক্লাব আর বিসিবির পরিচালকরা মাফিয়া ,একজন দেখলাম ক্যাসিনো কান্ডে জড়িয়ে মামলার আসামি। যারা ক্রিকেটর কিছুই জানে না ,তাদের হাতে এখন দেশের  ক্রিকেট।

আমদের ক্রিকেট শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তাই ক্রিকেট নিয়ে আর আবেগ নাই। যখন ছিলো তখনকার সময়টা শুধু মাশরাফি,  সাকিব,তামিম,মুশফিক,মাহামুদুল্লাহর.....

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

বায়েজিদ খান Love to read, write and travel.....